Thursday, October 13, 2011

Composition-Bodshokti



বোধশক্তি
নাসিম রানা মাসুদ
জ্ঞানীরা তাঁর শিষ্যকে কোন বিষয় সর্ম্পকে বোঝাতে ব্যর্থ হলে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে যতটুকু বিশেষনমূলক আলোচনা প্রয়োজন তা আমি করতে পারিনি। অর্থা শিষ্য যে বিষয় টি বুঝতে অক্ষম হয়েছে তার পুরো ব্যর্থতা টা জ্ঞানী নিজের কাধে নেন। এদ্বারা আমরা বুঝি যে, কোন বিষয় যদি কাউকে বোঝানোর জন্য উপাস্থাপন করা হয় তাহলে বিষয় টি যেন সহযেই শ্রোতা বুঝতে পারে সেরকম করেই উপাস্খাপন করতে হবে। নাহলে যত সহয বিষয় ই হোক না কেন শ্রোতার তা বোধগম্য না হওয়ারই আশংকা বেশি। এ সর্ম্পকে একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলি, আমি তখন একাদ্বশ শ্রেনীর ছাত্র, টিউশনি করতাম। আমি ৬ষ্ঠ শ্রেনী-১০ম শ্রেণী পযর্ন্ত ছেলেমেয়েদের পড়াতাম। ছেলেমেয়েরা পড়ে আমার সুনামই করত । আমার র্দুসম্পর্কের একজন চাচা ছিলেন, তিনি ৫ম শ্রেণী পযর্ন্ত পড়ালেখা করেছিলেন। তবে তিনি ১ম-৫ম শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতেন। একদিন তিনি বিশেষ কাজে কয়েক দিনের জন্য বাড়ীর বাইরে গেলেন এবং যাওয়ার সময় আমাকে তার ছাত্র-ছাত্রীদর পড়াতে বলে গেলেন। আমি দিন কয়েক তাদের পড়িয়েছিলাম, ফলাফলে তারা অভিযোগ করেছিলো নতুন স্যার আমাদের স্যারের মত জানেন না এবং পড়াতে পারেন না।অর্থা, আমি আমার চাচার মত তাদের বোঝাতে পারিনি। কারণ চাচা ভালো করেই জানতেন কিভাবে ছোট শিশুদের পাঠদান করা যায়। আর আমি--! যাহোক বলতে চাইছি, শিষ্যকে কোন বিষয় সম্পর্কে বোঝাতে হলে নিজেকে বোঝানোর মত করে উপাস্থাপন করতে হবে ।প্রচার প্রকাশের অঙ্গভঙ্গিও এক্ষেত্রে কম দায়ী নয়।প্রকাশের ভঙ্গি যদি খুব মষ্টি ও যথাযথ হয়, তাহলে বিষয় টি সম্পর্কে শ্রোতা সহজেই বুঝে নিতে সক্ষম হয়।

এতক্ষন যা বললাম তাতে পাঠকগন হয়ত ভেবে বসেছেন, লেখক একতরফা কথা বলছেন ।তার মানে বোধগম্য হওয়ার জন্য যে টুকু দায়িত্ব রয়েছে তার সবটুকু গুরুর! না এবাপারে দায়িত্ব সবটুকু গুরুর নয়, সাথে সাথে শিষ্যের ও কিছু গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। যে বিষয় টি গুরু আলোচনা করছেন তা মনোযোগ সহকারে শোনা ও বুঝবার চেষ্টা করা হলো শিষ্যের বা শ্রোতার দায়িত্ব। আলোচক যদি কোন বিষয়কে সমপূর্ণ সাবলীল,সহজ ও সরল ভাষায় বুঝাবার উপযোগী করে উপস্থাপন করেও থাকেন আর শিষ্য বা শ্রোতা যদি তা মনোযোগ দিয়ে না শোনেন বা বুঝবার চেষ্টা না করেন তাহলে তা বোধগোম্য হওয়া একান্তই কাম্য নয়। ভাবছেন মনোযোগ দেওয়া তো এত সহয নয় কিংবা কেও বলবেন মনোযোগ দিতে যে পারিনে। একজন সাধারন মানুষ হিসেবে আমরা যদি বলি, একক বিষয়ের উপর একনিষ্ঠভাবে আমরা মনোযোগ দিতে পারিনে।তাহলে কথাটা একবারেই চিটা উড়া করে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মনোযোগ নিয়ে ব্যপক গবেষনা করে এ ঐক্যমতে পৌছেছেন যে ব্যক্তির মনোযোগ নিদির্ষ্ট বিষয়ের উপর ১সেকেন্ডের ও কম সময়ের ধরে স্থির থাকে। তাহলে উপায়! কোন বিষয়ের উপর একনিষ্ঠ বা নিবিড়ভাবে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব নয়, তবে বিজ্ঞানের আলোকে মনোযোগ এর যে কয়েকটি স্তর রয়েছে তার সবকটি যেন বিষয়টির উপর থাকে সে দিকে খেয়াল রাখা ব্যক্তির দায়িত্ব। যেমন : মনোযোগের তিনটি ক্ষেত্র- এক: মনোযোগ ক্ষেত্র দুই: অমনোযোগ ক্ষেত্র তিন: অচেতন ক্ষেত্র। ধরুন আপনি শিষ্য বা শ্রোতা হিসেবে মাদকাশত্তির অপকার সমন্ধে আলোচনা শুনছেন। এ অবস্থায় আপনার মনোযোগ মাঝে মাঝে বক্তার বা গুরুর বক্তব্য থেকে সরে যাবে সেক্ষেত্রে কখনো অমনোযোগী আবার কখনো অচেতন অবস্থায় চলে যাবেন। আপনি অমনোযোগ ক্ষেত্র বা অচেতন ক্ষেত্র যে অবস্থায় থাকেন না কেন আপনার উচিত হবে বিষয় সংক্রান্ত  অন্য যে কোন কিছুর উপর মনোযোগ দিয়ে আবার মূল বিষয়ে ফিরে আসা। যেমন: বক্তার বক্তব্যের সাথে অন্য কোন বক্তব্য বা বয়ের ভাষার মিল বা অমিল খাজা। কিংবা বিষয়টির টুকিটাকি খাতায় টুকে রাখতে মনোযোগ ব্যয় করা। কিন্তু আপনি বিষয়টির বক্তব্য শুনতে গিয়ে যদি বাসা, বন্ধ,ু বান্ধবীর কোন ¯^ib‡hvM¨ কথায় মনোযোগ ব্যয় করেন তাহলে বিষয়টি আপনার বোধগম্য হতে পারে না। অর্থা কোন বিষয় কে বোঝানোর জন্য যেমন বক্তার সুন্দর অঙ্গভঙ্গি করা এবং সরল ও সাবলীল ভাষার ব্যবহার করা একান্ত প্রয়োজন তেমনি শ্রোতা বা শিষ্যের দায়িত্ব হলো বিষয়টিকে ঘিরে তার মনোযোগ স্থাপন করা। শ্রোতা যদি বিষয়ের উপর মনোযোগ স্থাপন না করেন তাহলে বক্তার পক্ষে বিষয়টি বোঝানো সম্ভব নয়। এবাপারে একটি গল্পের কথা মনে হলো-কথিত গল্প, দাদা বলতেন :-এক কৃষকের মোটাসোটা দুটো বলদ ছিল। তিনি বলদ দিয়ে চাষাবাদ করতেন। এক ব্যক্তি একটা বিষয় সর্ম্পকে কৃষক কে বোঝাতে লাগলেন। কিন্তু কৃষক বুঝতে চাইলেন না। বক্তি কৃষককে নানাভাবে বোঝাতে চেষ্টা করলেন। কৃষক বললেন, আমি বুঝতে পারছিনা এবং কৃষক এও বললেন, আপনি যদি আমাকে বোঝাতে পারেন তাহলে আমার একটি বলদ আপনাকে দান করব। একথা শুনে কৃষকের স্ত্রী কৃষকের কানের গোড়ায় ফিসফিস করে বলল, কি বল বলদ দিয়ে দিবা। কৃষক বলল, আমি বুঝতে চেষ্টা করলে তো বুঝব আর বলদ দেব। অথা কেও যদি বুঝতে না চায় বা মনোযোগ স্থাপন না করে তাহলে বোধশক্তি কোনভাবেই কাজ করবে না। কেননা বোধশক্তি যেমন সরল সাবলীল বক্তব্যের উপর নির্ভরশীল তেমনি নির্ভরশীল মনোযোগের উপর।

নাসিম রানা মাসুদ
কবি, লেখক ও সাংবাদিক

Tuesday, October 4, 2011

Short Story by Nasim Rana Masud


জিজ্ঞাসার জবাব
নাসিম রানা মাসুদ

রনক, এস, এস, সি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সে এখন নিজের গ্রামের বাড়িতে। রনকের হঠা মনে হল মদনের সাথে তো দেখা করা হয়নি। তাই সে মদনের সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হল। মদনের সাথে দেখা হওয়াতেই রনক জিজ্ঞেস করল; কিরে মদন কেমন আছিস?
মদন বলল: ভালো থাকি না হয় খারাপ থাকি তোর কি? তুই তো বাড়ি ফিরে আমার সাথে দেখাই করিস নি।
মদনের অভিমান দেখে রনক একটু লজ্জিত হয়ে মনে মনে বলল আসলেই আমার এটা ভুল হয়েছে। বলল: সরি দোস্ত আসলে--
মদন:এখন তো সরে যাবি এটা আমার জানা ছিল।
রনক:তুই কি সত্যিই কষ্ট পেয়েছিস?
মদন: (হেসে) আমি কি সত্যিই কষ্ট পেয়েছি?
রনক: শোন, অনেকদিন কোথায়ও ঘুরতে যাওয়া হয়না। কালকে একটু কোথাও ঘুরতে যেতে চাচ্ছি, তোর কি কোন কাজ আছে?
মদন: বাবা, এখন আবার কাজের প্রশ্ন। আমাকে ছাড়া তোর কখনো কোথাও যাওয়াই হতো না, আর এখন আমি ফাকা আছি নাকি আমার কোন কাজ আছে তার খবর! আচ্ছা তুই কি আমাকে সাথে নিতে চাচ্ছিস?
রনক: তোর কাছে এতগুলো উত্তর আশা করিনি, আমি বলতে চাচ্ছি তুই যাবি কিনা?
মদন: (হেসে) আমি বলতে চাচ্ছি আমাকে সঙ্গে নেওয়া হবে কিনা? হা হা হা--
রনক সকাল সকাল গোসল সেরে ওর মাকে বলল, মা নাস্তা দাও। রনকের মা বলল:কেন? কোথাও যাবি নাকি?
রনক: হ্যাঁ মা অনেকদিন কেথাও যাওয়া হয়না, মনে করছি একটু ঘুরতে যাব।
রনকের মা: তা কার সাথে যাবি?
রনক: মদনের সাথে।
রনকের মা: তা কিসে যাবি?
রনক: সাইকেলে।
রনকের মা: রাস্তাঘাটে সাবধানে যাস।
রনক সায় দিল, মদন কে সাথে নিয়ে সাইকেলে ছেপে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে বের হল রনক, মদন সাইকেল চালাচ্ছে আর রনক পেছন সিটে বসে আছে। পথের মাঝে দুজনে কতদিনের যত জমানো গলপ ছিল তা একে অপরকে বলে যাচ্ছে ও শুনে যাচ্ছে। হঠা রাস্তার বাম দিক থেকে একব্যক্তি তাদের কে জিজ্ঞেস করল: কত বাজে ভাই?
রনক বলতে যাবে তার আগে মদন বলে ফেলল: আপনার কটার প্রয়োজন?
রনক বিরক্ত হল এবং কথাটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ব্যক্তিটিকে (হেসে)বলল: এখন সাড়ে নয়টা বাজে। কিছুক্ষন পর রনক মদনকে জিজ্ঞেস করল: তুই লোকটির সাথে এমন ব্যবহার করলি কেন?
মদন:ওর জন্যই এটা প্রাপ্য ছিল।
রনক: কেন?
মদন: ও এই আধুনিক যুগে ঘড়ি ব্যবহার করবেনা কেন?
রনক: ওর সামার্থ্য না থাকতে পারে।
মদন: আজকের সময়ে দুশো টাকা দিয়ে ঘড়ি কেনার সামার্থ্য কার নেই, ওরা সময় জিজ্ঞেস করে ঠিকই কিন্তু ঘড়ি  যারা ব্যবহার করে তারাকে দেখতে পারে না, বলে যারা নাকি ঘড়ি ব্যবহার করে তারা নোংরা ছোটলোক।
রনক: সবাইকে একইভাবে দেখলে হয়না, পৃথিবীতে সবলোক খারাপ নয়।
মদন: জানি, তবে এরা সবাই এমন।
রনক মনে মনে ভাবল, হায়রে মানুষ একজনের কাছে যেন অন্যজনের কোন মুল্য নেই।অথচ উচি ছিল, পৃথিবীতে সবাই সবার সহযোগিতা করবে এমন টি হওয়া। প্রত্যেকেই প্রত্যেককে প্রাপ্য অনুযায়ী সম্মান অথবা স্নেহ করবে।সবাই সবার সাথে ভালো ব্যবহার করবে, একে অন্যের সম্পদ ভক্ষন না করে সংরক্ষন করবে। কিন্তু কি এ পৃথিবীর মানুষের রূপ, প্রত্যেকেই নিজেকে বড় ভাবে আর অন্যেরা যেন তার কাছে কীট পতঙ্গের মত। এমন ভাবনার মধ্যে কিছু পথ পাড়ি দিল তারা।
নিরবতা ভেঙ্গে মদন বলল: কিরে কিছু বলছিস না যে?
রনক: বলার মত কোন ইসু নেই তাই।
মদন বলল: তোদের পরীক্ষার ফলাফল কবে বের হবে?
রনক: দুই মাস পর। পরীক্ষার কথা বলিস না তো এখন। এখন পরীক্ষা থেকে মুক্ত হয়ে ঘুরতে চাই রেজাল্ট নিয়ে ভাবতে চাই না, এখন একটু মুক্ত হয়ে ঘুরতে চাই। মদন জানিস বাম দিকের ঐ বাড়িটার পরের বাড়িটা আমার বন্ধুর বাড়ি। ওর নাম সজীব। মদন অভিমানের সুরে বলল: তুই কি তোর বন্ধুর সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিবি? তোরা তো পড়ালেখা করিস, তোদের অনেক মান আর আমি তো মুর্খ মানুষ, তোদের বন্ধুর সাথে আমার কথাবলা কি সাজে?
রনক বলল: সাইকেলটা দাড় করা। মদন সাইকেল দাড় করালে রনক বলল: তুই আমার সাথে চলিস না? আমি কি তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করি? নাকি অন্য কোন তত্ত্ব উদ্ভাবন করিস।
মদন: তুই বলিস কারন তুই আমার ছোটকালের বন্ধু তাই।
রনক: চল শালা, তোকে এখনই সজীবের বাড়ীতে নিয়ে যাব।
মদন: না না এখন যাব না, পরে যাব।
রনক: তোর কোন কথা শুনবনা, চল এখনই যাব। তারা দুজনে সজীবের বাড়ীর দিকে পা বাড়াল। যেতে যেতে মদন বলল, আমি মুর্খ মানুষ তোর বন্ধু যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে আপনি কি করেন তাহলে আমি কি জবাব দেব।
রনক: তুই যা করিস তাই বলবি। রনক ও মদন একটি বাড়ি পেরিয়ে সজীবের বাড়ীতে পেীছাল। সেখানে এক ছোট্ট খুকু কে দেখে রনক বলল, এই খুকু বাড়ীতে কি সজীব আছে? খুকু বলল: জানিনা দেখতে হবে।
রনক: তুমি কি একটু যাবে?
খুকু বলল: আপনারা এখানে দাড়ান আমি ডেকে দিচ্ছি। কিছুক্ষন পর সজীব বেরিয়ে এসে রনকদের দেখে বলল;কিরে কখন এলি, কেমন আছিস?
রনক: এইত এখনই, আছি ভালোই আছি। তুই ভালো আছিস?
সজীব: হ্যাঁ ভালো। সজীব মদনের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল; আমি সজীব।
মদন: আমি রনকের মুখ থেকে শুনেছি। আমি মদন।
সজীব: ও আচ্ছা। তো রনক বাড়ীর ভেতরে চল।
রনক: না রে থাক আজ আর যাচিছ না।
সজীব: তুই না হয় আসবি, কিন্তু এ ভাই তো সম্ভবত আসবেন না।
মদন: না ভাই আজ আর যাচিছ না, আর আসবনা কেন? রনকের সাথেই হয়ত একদিন চলে আসব।
রনক: তাহলে আসিরে সজীব।
সজীব: চলে যাবি?
রনক:হ্যাঁ আজকে আর দেরি করছিনা।
সজীব: তাহলে যা কিন্তু এ ভাইকে নিয়ে আবার আসবি,আচ্ছা?
রনক: আচ্ছা ঠিক আছে, এখন চললাম। সজীবের সাথে সাক্ষাত হওয়ায় মদন খুব খুশি। সে রনককে বলল, কিরে তোর বন্ধুরা এতটা ভাল আগে জানতাম না। এত সুন্দর করে কথা বলে- এমন মূহুর্তে উপর থেকে কে যেন পানি ফেলছে যা রনকের ও মদনের শরীর ভিজে যাওয়ার উপক্রম হল। তারা উপরের দিকে তাকিয়ে দেখল যে এক সুন্দরী যুবতী ছাদ থেকে এভাবে পানি ফেলল।
রনক বলল: আপু এভাবে পানি ফেলছ কেন?
মেয়েটি জবাবে বলল: তোর কি বাপের পানি ফেলছি?
মদন: বেশি--
রনক: এই মদন কিছু বলার প্রয়োজন নেই।
কিছুক্ষন নিরব থাকার পর মদন বলল; কিরে মেয়েটি এভাবে অপমান করল আর তুই কিছুই বললি না?
রনক: হয়ত ও বুঝতে পারেনি যে আমাদের গায়ে পানি পড়েছে, তাছাড়া ও হয়ত মনে করছে আমরা ওর সাথে দুষ্টামি করছি তাই এমন ভাবে উত্তর দিয়েছে।
মদন: ও আমরা এমন উত্তর দিলে খুব খারাপ হয়ে যায়, আর অন্যেরা দিলে সে অতটা বুঝেনা। তুই যে কি না।
রনক: চুপচাপ সাইকেল চালা, কোন কথা বলবিনা।
মদন: হ্যাঁ আমি সাইকেল চালায় আর তুই এসব কান্ড কর
রনক: তোর বন্ধুর সাথে কি দেখা করাবি?
মদনও বলল: লোকটির সাথে এমন আচরন করলি কেন?
এভাবেই এগিয়ে চলল তারা, সোনামসজিদ পেীছানোর পর মসজিদটিকে ঘুরে ঘুরে দেখল দুজনে।
এসময় মদন বলল: হ্যাঁরে রনক এই মসজিদ নাকি জিনে তৈরি করেছে।
রনক: কে বলল তোকে এসব কথা?
মদন: আমি তাই তো শুনেছি, এটা নাকি একরাতে জিনেরা তৈরি করেছে।
রনক: জি না সাহেব, এটা তৈরি করেছে; একজন সম্রাট যিনি এই গেীড় এলাকার সম্রাট বা রাজা ছিলেন তার নাম আলাউদ্দিন হোসেন শাহ
মদন: একটু লজ্জিত হয়ে, লেখাপড়া করলে কত কিছু যে জানা যায় তার হিসেব নেই।
রনক: চল সোনামসজিদ বাসস্টান্ড হয়ে বাড়ি যাব।
মদন: তার আগে কিছু খাওয়া দরকার।
রনক: তাতো লাগবেই, তাইতো বলছি, বাসস্টান্ড হয়ে যাব;ওখানে একটা হোটেল আছে ওখানকার পুরী ভাল, খেয়ে দেয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়াব। দুজনে বাসস্টান্ডের পাশে এসে দাড়াল। একজন যাত্রী বাস কাউন্টারে বসা একজন কে জিজ্ঞেস করল কি ভাই বাস কি ছেড়ে গেছে?
লোকটি জবাবে বলল: আপনার চোখ নেই, দেখতে পান না গাড়ী নেই? গাড়ী না থাকলে তো বুঝতে হবে তা ছেড়ে গেছে। যাত্রী লজ্জিত হয়ে বলল: ভাই এত রাগছেন কেন?
লোকটির জবাবে রনক আবারও ব্যথিত হলো;মনে মনে ভাবল মানুষ কি মানুষের জন্য নয়?
মদন বলল: কিরে তোর চোখ কান কি ছারাবারা হয়ে গেল না কি?
রনক: নারে এসব আচরন আমাকে ভালো লাগে না। তা বাড়ি যাবি না?
মদন: (হেসে বলল) না এখানেই সারা জনম থেকে যাব।
রনক ও মদন এগিয়ে গেল ক্ষনিকটা। দেওয়ালে লেখা একটি উক্তি দেখে রনক বলল; দেখ মদন ওয়ালে কি লেখা।
মদন বলল: কি?
রনক পড়ে শোনাল; জীবে প্রেম করে যে জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর মানে কি জানিস মদন, তার মানে হল; আলাহ তায়ালার ভালবাসা পেতে হলে আমাদের সর্ব প্রথম মানুষকে ভালবাসতে হবে, প্রতিটি প্রাানি কে ভালবাসতে হবে।
মদন: এত সুন্দর কথা কে বলেছে?
রনক: একজন মানব প্রেমী মানুষ, যার নাম ¯^vgx বিবেকানন্দ।
মদন: সে তোর মত লেখাপড়া করেছে, নারে?
রনক: তাতো অবশ্যই করেছেন?
মদন: তুই কি এসব মহান ব্যক্তিদের মত হতে পারবি না?
রনক: বিষয়টিকে একটু সহযভাবে নিয়ে হেসে বলল; কেন পারব না?

নাসিম রানা মাসুদ
কবি, লেখক ও সাংবাদিক