Bengali Poem

 আমার প্রেম

ভাদ্রের জোছনায়,
তারার মেলায়;
একি মনের উচ্ছাস!
একি?
প্রতিজ্ঞা ছিল যে তোমার,
ভাঙবেনা কোন দিন অভিসার॥

তুমি আসবে,
কাছে বসবে,
প্রেমগীতি শোনাবে আমায়;
প্রাণ উজাড় করে,
ভালোবাসব তোমায়॥

একা বসে আছি আমি
“অভিমানী”
অভিসারে এলে নাতো তুমি;
কর্মে আছ বুঝি,
নাকি গিয়াছ ঘুমি?

একি ঘ্রাণ নিশিগন্ধ্যার
পক্ষীও হচ্ছে এপারে ওপারে,
কি যেন শোনা যায় ঐ দুরে
বাদক হয়ত পাগল বাঁশির সুরে॥

শুকতারা উঠল,
 লুনী ও গেল ডুবে;
তবুও আসলেনা তুমি,
আশার প্রদীপ গেল নিভে॥

আসলে আসবে কেন তুমি ?
ভালোবাসবেই কেন আমাকে?
সত্যিই নির্বোধ আমি
ভালোবাসি,
একথা বলা হয়নি তোমাকে॥

তোমার খোঁজে-১

তোমাকে খুঁজেছি
বৈশাখের ঝড়ো তান্ডবে,
বর্ষার বৃষ্টির আর্তনাদে
থৈ থৈ খাল বিলে
আলপনার জলে;
মাঘের হাড় কাঁপানো জাড়ে
কুঠিরের কোণে,
পায়নি তোমার খোঁজ
তবুও আসবে বলে
পথ চেয়ে থাকি রোজ॥

খুঁজেছি তোমাকে
স্বপ্ন থেকে বহুপথ পাড়ি দিয়ে-
অমৃত লোকে,
কুদুস হতে সপ্তাকাশে
মেঘের ভেলায় ভেসে
অম্বরের অথৈয় বাতাসে;
মেলেনি তোমার খোঁজ,
তবুও তুমি আসবে বলে
পথ চেয়ে থাকি রোজ॥

আমি খুঁজেছি তোমাকে
শশীর পথ ধরে সুদূর মঙ্গলগ্রহে,
শনি হতে সোজা বৃহঃস্পতি
আর সমুদ্র তীর হয়ে বিশ্ব ব্রমান্ডে;
মেলেনি তোমার খোঁজ,
তবুও আশায় থাকি
তুমি আসবে, ভালবাসবে মোরে
পথ চেয়ে থাকি রোজ॥

তোমার খোঁজে-২

এত দিন কোথায় ছিলে?
খুঁজেছি তোমাকে;
বৈশাখের ঝড়ো তান্ডবে
বর্ষার বৃষ্টির আর্তনাদে
থৈ থৈ খাল বিলে
আলপনার জলে;
মাঘের হাড় কাপানো জাড়ে
কুঠিরের কোণে,
পায়নি তোমার খোঁজ
হঠাৎ কোথেকে এসে
                   দোলা দিলে প্রাণে;        
বল তো এতদিন কোথায় ছিলে॥

কোথায় ছিলে?
আমার স্বপ্নে?
আমি তো খুঁজেছি তোমাকে
কল্পনা থেকে
বহুপথ পাড়ি দিয়ে ধূ ধূ স্বপ্নে;
যদি তোমার খোজ মেলে
মেলেনি তোমার খোঁজ,
হঠাৎ কোথেকে এসে
দোলা দিলে প্রাণে,
বল তো এতদিন কোথায় ছিলে॥

কোথায় ছিলে?
হৃদয় গহিনে,
আমার জিগরে-
ব্যাকুল প্রাণে?
আমিতো খুঁজেছি তোমাকে,
হৃদির ক্রন্দনে
ব্যাকুল চাওয়া
আর আগমনী স্বপ্নে;
যদি তোমার খোঁজ মিলে,
পায়নি তোমার খোঁজ;
হঠাৎ কোথেকে এসে
বসলে হৃদয় জুড়ে
বলতো আমায়
ঠিক এতদিন কোথায় ছিলে॥


কোথায় ছিলে?
আমার মন খাঁচায়,
হৃৎপিন্ডের স্থলপিন্ডের মাঝে?
আমি তো খুঁজেছি তোমায়
বক্ষরাজার মাঝে,
ব্যাকুল জিগরে স্থলকণিকায়;
যদি তোমার খোঁজ মিলে,
মেলেনি তোমার খোঁজ’
হঠাৎ কোথেকে এসে
জড়ালে ভালবেসে;
বল তো আমায়,
ঠিক এতদিন কোথায় ছিলে॥

কোথায় ছিলে?
নয়নের কোণে,
কর্ণিয়া হতে রেটিনার মুক্তবনে ?
আমি তো খুঁজেছি তোমাকে
দূর হতে আরও দূরে,
নয়নের দৃষ্টিলোকে
ব্যথিত কান্নার অশ্রুতে;
যদি তোমার খোঁজ মিলে
হঠাৎ কোথেকে এসে
জড়ালে ভালবেসে,
বল তো, আহা-বলনা আমায়
এতদিন কোথায় ছিলে।

হারানো মানুষ

একি তুমি!
ফিরে এসেছ?
ভাবতেই অবাক লাগে,
মনে পড়েছে আমায়;
কতদিন দেখিনি তোমায়॥

হেরে গেছি?
না তেমন নয়
কেমন আছ তুমি?
আমি............?
ভালো; তোমাকে হারানোর-
এক যুগ এক বছরে,
সহস্র মানুষের ভিড়ে
সঙ্গী হয়েছিল নি:সঙ্গতা;
নয়ন ও ঝরেছে অঝোরে॥

এ কেমন অতৃপ্তিময় জীবন
তুমি এসেছ
তবুও কেন দূরে?
এসোনা বুকটা ভরাতে,
কি আসবে না!

আমি! আমি কে?
আমি তো তোমার প্রাণ
তোমার হৃদয়ের মুক্ত পাখি,
দেখছ না আমাকে-
দেখ, তুলে তোমার আঁখি॥

চলে যাবে! কোথায়?
চোখের আডালে,
স্থায়ী নির্জন ভূবনে!
সজ্জিত বিছানে,
বিরক্তহীন ঘুমের সাগরে?

তুমি যাও, ঘুমাও, ঘুমাও
তোমার ঘুম ভাঙ্গবেনা;
তুমি আসোনি,
তুমি আসোনি আমার কাছে
তোমাকে দেখিনি নয়নে,
দেখেছি অলীক স্বপনে


রাগে-অনুরাগে

ও আজও তোমাকে ভালবাসে;
তুমি কি আজও তার আশায়-
বিছানে পা গুটিয়ে,
বুকের মাঝে ক-খানা
বই জড়িয়ে বসে থাক?
আর মনে মনে-
কত না রঙ্গিন স্বপ্ন আকোঁ?

ও বুঝে তুমি ফিরে যাও’
ব্যর্থ হয়ে অবশেষে,
তবে বিশ্বাস কর;
ও আজও তোমাকে ভালবাসে॥

ওর হৃদয় আজও তোমাকেই-
বার বার ডাকে,
নিয়ত ও নিয়তির খেলায়
ও পড়ে আছে অনেক দূরে
তোমারই ছায়ায় ও মায়ায়
ওর কণ্ঠে ধ্বনিত হয় গান,
তবে আজ মধুর নয়
করুণ সুরে॥

ও চায় কিন্তু পারেনা অবশেষে;
বিশ্বাস কর,
ও আজও তোমাকে ভালবাসে॥

ওর মনে আজও তোমারই
স্বপ্ন জাগে;
তুমি কি এখনো মানে অভিমানে
ঠোঁট বাকিয়ে, চোখ রাঙ্গিয়ে,
কণ্ঠে তোল মৃদু অনুরাগের সুর?
তুমি কি আছো খোপাই গোলাপ বেঁধে-
অনেক স্বপ্নের সাজে,
নতুন দিন গুনো?
আর স্বপ্ন দেখ সুমধুর?

ও বোঝে তুমি আজও আস্তে আস্তে
চেয়ারের পেছনে বেয়ে এসে,
চেয়ারে হাত রেখে
হঠাৎ দেখ ও নেই;


তখন ফিরে যাও অবশেষে;
তবে বিশ্বাস কর,
ও আজও তোমাকে ভালবাসে।

ও আজ তোমাকে ভালবাসে;
প্রকৃতি ও নিয়তির খেলায়,
ও পড়ে আছে অনেক দূরে;
আজও ওর কণ্ঠে ধ্বনিতে হয় গান,
বড়ই করুণ সুরে;
ও চায় কিন্তু পারে না অবশেষে;
বিশ্বাস কর,
ও আজও তোমাকে ভালবাসে॥


প্রেমিকার প্রণাম

সপ্তমী, অষ্টমী নবমী ঘুরে
দূর্গা পূজার মন্ডপে,
প্রণাম করেছিলেন আমাকে;
সেই থেকে ভালবাসি তোমাকে॥

ভগবানের কৃপাতে,
পূর্ণিমার রাতে,
হয়েছিল গোধূলীর মিলন;
দেখেছিলাম দু’চোখ ভরে,
তোমারই নয়ন;
আশীর্বাদের ছলে হাত বাড়িয়ে-
জড়িয়েছিলে বুকে,
সেই থেকে ভালবাসি তোমাকে॥

ফুলের নামে এসেছিলে
শিমুলতলে,
উজাড় করা ভালোবাসার সুধা-
দিলে এই অন্তরে;
তোমার ঐ স্মৃতি ঘিরে ছিলো আমাকে’
সেই থেকে ভালোবাসি তোমাকে॥

নির্বোধ মন

কতটা পথ হেটেছ তুমি-
হৃদির আশায়,
কোনঠাসা ভালবাসায়;
কি বোকা আমি-
নজর দেয়নি তোমার মায়ায়।

অশ্রু ভেজানো চোখ,
মায়াভরা উদাসী মুখ-
স্বপ্নাহাসির চাহুনী অপলক,
চেয়েছ আমায়;
কি বোকা আমি-
নজর দেয়নি তোমার মায়ায়।

ঠোঁটের অবচেতন নড়ানো ভাব,
হৃদির অব্যক্ত কথার ঝুড়ি বাগে বাগ;
অপেক্ষার নিশি কাটেনা আর-
বলতে চেয়েছ আমায়,
কি বোকা আমি-
নজর দেয়নি তোমার মায়ায়।

অভিমানী রাগের সুর,
ভেতরে অব্যক্ত ব্যথা বেদনা বিধুর-
 আর নয়নে কল্পনার সাগর;
স্বপ্নে স্বপ্নে ডেকেছ আমায়,
বলত কি বোকা আমি-
নজর দেয়নি তোমার ভালবাসায়।


রূপালী চাঁদ

আমার মনের স্বপ্নে
তুমি যে রত্ন,
তোমা দর্শনে-
মেটেনা মনে স্বাদ
তুমি যে রূপালী চাঁদ।

মম মনের নেশা-
তোমায় ভালবাসা,
আছ অন্তরে মেশা;
তোমা দর্শনে-
মেটেনা মনের স্বাদ
তুমি যে রূপালী চাঁদ।

চাঁদনি রাতে-
মনের সরসীতে
লাগে যে, মধুর-
তোমারই গানের সুর
তোমা দর্শনে-
মেটেনা মনের স্বাদ,
তুমি যে রূপালী চাঁদ।

তুমি বিনে মন্দ সবি,
পুষ্প বৃক্ষ তারকা রবি;
হৃদয়ে গাথা তোমারই ছবি,
তোমার দর্শনে-
মেটেনা মনের স্বাদ,
তুমি যে রূপালী চাঁদ।


মণি

মণি, নতুন বছরে-
হৃদয় মাঝারে,
বাজে অনুরাগের ধ্বনি॥

মণি, স্বপ্নীল সূর্যটা দেখেছ?
কেমন জানি-
নতুন জীবনের আভাস,
অভিমান করছ?
দেখ! বইছে ঝিরি ঝিরি বাতাস॥

মণি, না যদি দাও
নাই দিলে ভালবাসা;
তোমাকে পেয়েছি হৃদয়ে’
নেই তো কোন আর আশা॥

মণি, তোমাকে বোঝানোর-
নেই কোন ভাষা;
আজকের স্বপ্নীল সকালে-
শুধু জানায় তোমাকে,
নববর্ষের শুভেচ্ছা॥
শুভ নব বর্ষ


স্বপ্নের পরী

কোথায় গেল তোমার-
সেই চাহুনি
যা আমাকে পাগল করেছিল;
বল, বল না তুমি,
ঠিক এখনি।

প্রথম দেখায় মনে হয়েছিল-
যেন হাজার বছরের চেনা;
শুধুই দেখেছিলাম নয়নে,
তোমার সবই ছিল অজানা।

স্বপ্নের পূর্ণতা কি এখানেই-
নাকি নতুন কোন স্বপ্ন আছে?
তা জানিনা, তবে জানি-
তুমি আছ আমার মনে;
আছ আমার হৃদয় মাঝে।

তুমি কি আমার-
স্বপ্নের পরী?
যাকে কল্পনায় নিয়ে-
স্বপ্ন একেছি
ঠিক জন্ম থেকে;
আমার শুধু মরতে ইচ্ছে করে,
তোমারই প্রেমের আগুনে ধিকে ধিকে।


শামসুন্নাহার

নাহার, তুমি কি আমার প্রেমিকা-
নাকি প্রণয়ণী?
না  স্বপ্নেআঁকা সুখের-
এক নতুন ধরণী॥

আমি জানি
আমি পাগল যার,
সেতো তুমি, আমার প্রিয়া,
আমার সত্ত্বা, শাসসুন্নাহার॥

নাহার, তুমি কি আমার প্রণয়ে-
ডগমগ?
নাকি বিব্রত খড়ড়গ?
তুমি যাই হও
শুধু মনে রেখ;
আমি পাগল যার,
সেতো তুমি-
এই তুমি শাসসুন্নাহার॥

নাহার, তুমি মোর সত্ত্বা-
নয় ছন্দে, নয় শব্দে
তুমি আমার প্রণয়ণী,
আছ হৃদয়ে, অন্তরে;
আমি জানি,
আমি পাগল যার-
সেতো তুমি, আমার প্রিয়া,
আমার জীবন, শামসুন্নাহার।


মিতা

মিতা,
তুমি সত্যিই সুচিস্মিতা;
মিষ্টি হাসির ছলনায়-
মনটা কাড়িলে,
স্বয়ম্বরা হয়ে ভালবাসিলে,
ওগো আমার অভিসারিণী’
তুমি সত্যিই হবে-
আমার ঘরণী?
ভেবে আত্মহারা,
ওগো প্রণয়ণী, তোমার স্বরণী|

তুমি সুকেশী সুন্দরী নারী,
তুমি বিনে-
কেমনে থাকতে পারি;
ওগো ধরণীর সনয়না সুদর্শনা,
ভালবাসি কত-
আছে কি জানা?

উত্তরে বলিলে সবই বুঝি,
তোমারই মাঝে পৃথিবী খুজি;
আমি জানি-
তুমি যে প্রিয়ংবদা,
বলতে কথা-
তাই তো ইচ্ছে হয় সর্বদা॥


অপেক্ষা

অপেক্ষা আর অপেক্ষা;
আসবে আমার জীবন;
থাকবেনা কপালে-
ঘৃণার কৃষ্ণ রেখা,
থাকবেনা প্রহসন॥

ও শুনেছে নাকি যেতে বসেছি;
সমাজের নিয়ম,
তার পরেও আপন বলে কথা’
থাকা কি যায়-
আর কাজ নিয়ে মেতে?

আসল অবশেষে-
দেখবে সচেতন,
কাজ হলো-
হয়েছে অচেতন;
বলল, এই দেখ!
আমি এসেছি?
চোখ দুটো খোলা-
চারপাশের লোকেরা নিস্তব্দ
চোখ দুটো বলল-

কে? ও তুমি;
একি তোমার নেশা-
ছুটে এসেছ,
হাতে এক গাদা ফল;
আমি তো চায়নি করুণা,
চেয়েছি ভালোবাসা॥

মনে রেখো

ভাবিত হৃদয় কহিল’
কে মনে রাখিবে তোমায়?
জবাবে ফের কহিল’
কেন? কদমতলীর ‘জীবন’
কলেজের বন্ধু ‘সাজু’ আর-
প্রিয় বান্ধবী ‘নীলিমা’॥

মনে রাখিবে বলে-
জিগাইনু সোনা মসজিদের রাজুকে
হ্যারে, “কতকাল গোঞ্জায়েছি ্‌এক সাথে
আমি বুঝি থাকব নারে-
মনে রাখবি তো আমাকে?

জবাবে কহিল, রাজু বার বার-
কি করেছ আমার?
কি দিয়েছ আমায়?
খামাখা মনে রাখব তোমায়॥

তপ্ত হৃদয়ে ছুটিনু
চৌধুরী পাড়ার রহিমের কাছে,
কহিনু, আমি থাকিবনা তোদের মাঝে;
কত উদ্ধার করেছি তোরে-
কিরে, মনে রাখবি তো মোরে?

কহিল এ্যাঁ, অমন পাপকাজে-
সাহায্য করেছ আমায়,
যা চুক্তি ছিল দিয়েছি তোমায়;
কি বললে আমায়?
আমি, আমি মনে রাখব তোমায়॥

ছুটে গেলাম বিল পাড়ার-
প্রিয় বান্ধবী মনিকার কাছে’
কহিনু কেমন আছ তুমি,
আর বুঝি এ মহীতে রবনা আমি;
কত ভালোবেসেছি তোমায়,
প্রিয় বান্ধবী মনে রেখো আমায়।



জবাবে কহিল সে-
‘তোমায় মনে রাখব ক্যানে
তুমি কি কিছু দিয়েছ এনে?’

ফিরে এলাম, জিগিলাম
ঘাসের ডগায় জমানো শিশির বিন্দুকে’
আমি বুঝি রবনারে,’
সপুটে বলি তোরে;
আমি ভালো কিছু করিনাই-
মনে রাখিস আমায়।

কহিল বেশ মনে রাখিব তোমায়,
তবে বল তো আমায়;
আমি রব কতকাল
তুমি ছেড়ে যাবে যবে,
আমিও শেষ তবে॥

অবশেষে ফিরে এলাম-
নিজের হাতে লাগানো -
বটগাছের গাছের কাছে,
কহিনু, কিরে মনে রাখবিতো আমায়?

জবাবে, তোমারে মনে রাখিব না কেন
তুমি যে মোর অন্যদাতা, পালকপিতা,
তুমি ঝড়ের মাঝে আমার মস্তকের ছাতা;
তুমি একথা বলে গমি দিওনা আমায়-
আমি হ্যাঁ এই আমি যতকাল বাঁচি-
ঠিক ঠিকই মনে রাখবে তোমায়।


মায়াবিনী

একি মানবী নাকি মায়া;
চোখ দুটো টানা টাকা,
ঠোঁট যেন গোলাপ ফোটা-
পড়ে নেই তার ছায়া,
ও কি মানবী নাকি মায়া॥

নাক তো নয় যেন বাঁশি,
যেন হাজারো মন পিয়াসী;
মায়াবী গালের টোল,
আমায় করেছ যেন পাগল;
পড়ে নেই তার ছায়া-
ও কি মানবী নাকি মায়া॥

ওর কাজল কালো কেশ,
দেখে শত নারীর দ্বেষ;
কর্ণে দুলানো দুল-
যেন ফোটা অপূর্ব ফুল;
পড়ে নেই তার ছায়া-
ও কি মানবী নাকি মায়া॥

আহ! কি ছন্দ তার চলনে,
কি মধু তার বলনে,
অঙ্গ ভরে রূপের লুকোচুরি-
আবার ও পরেছে রঙ্গিন শাড়ী;
পড়ে নেই তার ছায়া-
ও কি মানবী নাকি মায়া॥

প্রেমের রূপ

আমি যবে সুস্থ সবল
তুমি মোরে কত ভালবাস;
রোজ রোজ দেখতে-
ছুটে আস;
কিবা দিবা কিবা রাতি,
নয়ন ভরে দেখি,
চন্দ্রিমালোকে ভরা-
তোমারই ওজুদের ভাতি॥

মায়াবী চোখের চাহুনি,
পাগল করা কন্ঠস্বর,
বাঁশির মত নাকখানি-
আর লোহু রঙে রাঙানো-
বিম্বাধর

কোমর দুলানো পথচলা,
মিস্টিস্বরে বচনের কথাবলা’
পায়ের নুপুরে বাজনার তাল,
ওসবে, আমি যেন পাগল॥

অপিচ, আমি যবে দূর্বল অক্ষম,
মোর প্রেমে থাকেনা তোমার মন;
নয়নে ওজুদে হেরি ওদাসীন্য,
হাজার বছরের অনাহারী,
ছোবল দিয়েছে যেন-
তোমারে দৈন্য॥

বাবা মায়ের হকমের আঁঠ,
ফ্যাকাসে চেহারা-
আর চুলে জঠ॥

কপালে ঘৃণার কৃত্রিম কৃষ্ণরেখা,
চোখের নিচে জমানো কালি,
এভাবেই একদিন আচমকা-
ঝেড়েফেলো গায়ের ধুলাবালি,
মনে পড়ে আমাকে’
দিতে আস অভিসারের দেখা-
যখন পড়ে থাকি একা,
শুধু একা॥


প্রিয়ার স্মরণে

তোমায় ছেড়ে আজি-
আমি এই বাংলায়;
চট্টগ্রাম থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ,
সবই যেন আমার’ জীবন পথ॥

পূলকের আবেস,
অজস্র ভালোবাসা-
আর সম্মাননার বিচিত্র খেলাত,
সব নিয়ে-
আমি এ বাংলায়;
তোমার কি মনে পড়ে আমায়?
বসে বসে-
সূদুরে থেকে ঐ কলকাতায়॥

শৈশবের জমানো আড্ডা,
মাঝে মাঝে-
অভিমানের কথা না বলা,
যামে যামে অস্থায়ী ঝগড়া-
আর রুপকাহিনীর বই পড়া;
মনে পড়ে কি তোমার?
চোখের আড়ালে থেকে-
সূদুরে এ  কলকাতায়॥

তোমার মুখের মুক্তো ঝরানো হাসি,
পূবালী বাতাসে ওড়ানো-
দীঘল কালো কেশ
জমানো ভালোবাসার শুভেচ্ছা-
রাশি রাশি
আমার মনে পড়ে বেশ;
মনে পড়ে কি আমায়?
আড়ালে থেকে ঐ কলকাতায়॥

মনে পড়ে কি তোমার?
বহুদিন অসাক্ষাতের পর,
স্বরসতী পূজার হিন্দুৎসবে-
নদীর মাঠে-
তোমায় দেখে-
আমি গিয়েছিলাম কল্পনা থেকে-
সূদর অমৃতলোকে॥



খুব মনে পড়ে আমার;
তোমার পায়ে প্যাচ্যানো নুপুরের শব্দ,
মাঝে মাঝে লুকোচুরি খেলা,
নদীর পাড়ে পাখির কলতান,
বকের এপারে-ওপারে পারাপার,
ডুবরী পাখির হাজারো ডুব,
একসাথে বসে দেখা-
সূর্যের হাসি,
ঠিক মিষ্টি বিকেল বেলা॥

তোমার ঠোঁট বাকানো দস্যিপনা
চোখ রাঙ্গানো অবুঝ ক্রোধ
আর যখন অন্য নারীর কল্পনা-
আমাকে ঘিরে,
তখন অমলিন দ্বেষ;
মনে পড়ে কি তোমার,
আমার মনে পড়ে বেশ॥


প্রিয়ার অভিলাষে

সূর্যের ঝলকানো হাসি-
আর নেই;
অসহ্য দাবদাহ শেষে-
বর্ষার আগমনে-
ভেজা বিকেল বেলা,
আকাশে ছালি ছালি-
মেঘের পসলা;
হয়ত বৃষ্টি নামবে একটু পরেই;
দিনের সকল কাজ সেরে,
বসেছি বেলকুনির পাশে;
তাকিয়ে পথ পানে-
যদি মোর প্রিয়া আসে॥

বাঁশ ঝাড়ে বকের আনা গোনা,
মাথার উপরে মেঘের মৃদু প্রতিধ্বনি,
হালকা হাওয়ার পরশে-
শীতল গা খানি;
তারই মাঝে স্বপ্নের হাতছানি;
এসেছে শান্তির পরশ কাছে,
চেয়ে থাকি পথ পানে-
যদি মোর প্রিয়া আসে॥

রিমঝিম বৃষ্টি এসেছে অবশেষে;
মেখের ভেলায় ঢাকা-
সূর্যের আলো,
আঁধার ভরা ধরণীর মাঝে-
নয়নের আলো-
তোমারই খোজে প্রতীক্ষায় আছে,
যদি মোর প্রিয়া আসে, মোর পাশে।

গ্রীষ্মের দাবদাহ কেটে গেছে,
জুড়িয়েছে দেহের মাংশপেশী;
তবুও অসহ্য দাবদাহ প্রাণে,
হেতু আসনি তুমি,
বসো নি মোর পাশে-
ডাক নি প্রিয় বলে,
চেয়ে দেখনি মোর পানে॥  
  মায়াবী পূর্ণিমার রাতে

মায়াবী পূর্ণিমার রাত,
তোমার হাতে আমার হাত;
চোখে মুখে উচ্ছাস-
আর মুক্তো ঝরানো হাসি,
আমি বড়ই ভালবাসি॥

রাখালিয়া বাঁশির সুর,
নিশিগন্ধার গন্ধ সুমধুর;
বিলের মাঝে ছোট নৌকার সমাহার,
নিভ নিভ ছোট প্রদীপের বাহার;
তোমার সাথে খোশ গল্প-
মাঝে মাঝে মুক্তো ঝরানো হাসি,
আমি বেশ ভালবাসি॥

ঘাসের ডগায় জমানো শিশির বিন্দু,
তার পরে জোসনার ঝলক-
মনে জমে বড়ই দ্বন্দ্ব;
ভাবি এ হীরা,  নাকি কনক?
মাঝে মাঝে মেঘের ভেলায় ঢাকা-
চাঁদের ধুপছায়া আলো,
আমি বেশ বাসি ভালো॥

হঠাৎ চাঁদকে দেখি-
ও যেন যেতে চায় লুকিয়ে,
শুকতারার আগমনে-
মনকে তোলে ভাবিয়ে,
চমকে ওঠে দেখি;
একটি চাঁদ আছে-
ঠিক আমার পাশে
লজ্জা পেয়েছে ঐ চাঁদ,
দেখে প্রিয়াকে রুপালী চাঁদের বেশে
হেসেছে মিটি মিটি, চলেছে অবশেষে॥


প্রেমের সুখ

আমার দিদৃক্ষ নয়ন-
তোমার অপেক্ষায়;
তুমি আসোনি মোর ৱেহে,
প্রহর গুনে গুনে’
পা বাড়ায়েছি অবশেষে-
তোমার গৃহে॥

আজ হাসিছে শশী,
নদ-নদীর জলের কল্লোল,
পুলকে পুলকে পুলকিত-
ভেবে মিলনের হিল্লোল;
দক্ষিণা পবনের দোলা,
হিমেল পরশে-
সোনালী ক্ষেত্রের দোলানো অভিনয়-
প্রাণ ভোলা

তোমার গৃহে এসে,
হাজির হয়েছি অবশেষে;
চমকে চমকিত হয়ে-
বললে আমায় হেসে,
কি ব্যাপার তোমার,
আসবে মোর গৃহে-
জানালে তো আমায়

গল্প শুরু হলো;
বললাম তোমাকে এক পলক দেখব বলে-
কত আশা ¯^cœ আর-
অপেক্ষা নিয়ে প্রহর গুনেছি,
ভেবেছি তুমি কর্মে আছ-
তাই এসেছি কত ছলে, কৌশলে॥

এত কথা মায়াবী চাহুনী-
তোমার প্রাণে ঠেকেনি,
ধরেছি তোমার বাস্মিতা নেই-
তুমি দিয়েছ আমায়,
তোমার বুকে ঠাই-
আমি আর কি চাই॥


আসলেই নির্বোধ আমি,
বাকশক্তিহীন নও তুমি;
তোমার সারোষে ভরা চোখ,
আমার মায়াভরা বুক;
এমন আস্ফালন-
আর রোষের লাভা চোখে মুখে,
পারবে কি কেও -
পারবে ভাসাতে নিজেকে-
প্রেমের আমরণ সুখে॥

স্বপ্নের দিন

আকাশে চাঁদ উঠেছে,
বাগানে নিশিগন্ধা ফুটেছে,
মনে হয়েছে রঙিন,
আজকে স্বপ্নের দিন॥

গগনে তারার মেলা,
কোথায়ও নেই দেয়ার শিলা;
বাজিছে মিষ্টি বীন,
আজকে স্বপ্নের দিন॥

জোৎসার সৌরভে,
মনের গৌরবে,
হৃদয়ের হয়েছে মিল;
আজকে স্বপ্নের দিন॥

ঝিরিঝিরি বাতাসে,
হিমেল পরসে-
মন হয়েছে রঙিন,
আজকে স্বপ্নের দিন॥

পুষ্পের গন্ধে,
ঘ্রাণের রন্ধে,
গমির বিলীন-
আজকে স্বপ্নের দিন॥

নীল আকাশের নিচে

ওই নীল আকাশে যদি তাকাও তুমি’
চাঁদকে দেখতে পাবে ,
আকাশের সাথে চাঁদের প্রেম দেখে,
মিটিমিটি হেসে যাবে ।
আমারই বুকে তুমি
আস যদি চাঁদ হয়ে
স্বর্গ নেমে আসবে।

দেখ, তারাগুলো পরী হয়ে-
চাঁদেরই সাথে সাথে-
আকাশে মিশে আছে,
তোমারই ভাবনায়,
স্বপ্নে স্বপ্নে আমার-
চোখ দুটো ভরে গেছে।

দেখ, জোৎস্না ভরা রাতে,
শিশির ভেজা ঘাসে-
বাতাসের হিমেল রেস,
তোমারই ভাবনায়,
তোমারই সাধনায়,
আমি যে ডুবে গেছি বেশ।



নববর্ষে তুমি

সোনার খনি,
নয়নের মণি,
মায়াবী মায়াবী মন;
এসেছে নববর্ষের ক্ষন॥

সঙ্গীতে ভাব-
হৃদয়ে নব খওয়াব;
অভিলাষী মন,
এসেছে নববর্ষের ক্ষন॥

অনুতাপের ছোয়া-
আসলে নয়, সব ভুয়া,
বটে, স্বপনের ঘোর-
এসেছে নতুন বছর॥

পিয়াসী পিয়াসী মন-
কই আপন জন, আপন জন;
নবছোয়ায় কাটছে প্রহর,
এসেছে নতুন বছর॥

সরহী খেলাত

এই হাত ভালোবাসার হাত;
উষ্ণ নেহে, মিলনে-
চুম্বনে চুম্বনে চুম্বনী খেলাত,
এসো না, ভালোবাসনা নেহাত;
মধুর কর না বিষাদী রাত।

অভিমানী সুর-
মায়ায় ভরপুর,
ঘোমটায় গোমটা মুখ;
মেকি ছোয়ায় সপ্নাহাসি,
উদার বুকে স্বর্গের সুখ;
আর পুলকের শুভেচ্ছা রাশি রাশি।

জীবনের আলোয় প্রেম,
স্বর্গের সুখ, স্বপ্নীল হেম;
ঐ নদীর হাটুজল পানি,
তোমার মায়ায় ভরপুর জানি।

আমার হাতে তোমার হাত,
চুম্বনে চুম্বনে শরহী খেলাত;
এসো না, ভালোবাস না,
মধুর কর না বিষাদী রাত।

স্বীয়রূপ

আমি উগ্র, আমি শ্রান্ত,
আমি হতে চায়না চায়না-
কখনো ক্লান্ত,
মহাশান্ত॥

আমি শিল্পী;
গাই মানুষের গান,
এ গানের মাঝেই খুজে পাই-
আমার মন ও প্রাণ॥

আমি অভিনেতা;
করি মাটি ও মানুষের অভিনয়,
সত্যকথা তুলে ধরি-
করিনা করিনা দিধা সংশয়॥

আমি ধ্যানী;
করি মানুষের ধ্যান,
ধ্যানই ওদের প্রয়োজন খুঁজি-
খুঁজি মান ও সম্মান॥

আমি তপ্ত,
শুধু শ্বাপদের প্রতি ক্ষিপ্ত,
করিনা করিনা দ্বিধা,
মানুষ বাঁচাতে-
দিতে নিজের শরীরের রক্ত॥

আমি কবি
লিখি মানুষে কবিতা
এরই মাঝে তুলি সভৃষ্টতা
তুলি মানুষের সভ্যতা॥

আমি প্রেমিক;
স্বদেশেরে করি প্রেম,
ভক্তি করি মাটিরে,
পুজি হীন-খাটুরে-
হেরি উজ্জ্বল হেম॥

ফিরে আয়

ভেদি কাল, জঞ্জাল;
নহে ওয়াস্তা,
উন্মক্ত কর্‌ ইলমের বস্তা-
ধরা নহে সস্তা, ঈশ্বরের রাস্তা;
হয়ে যাচ্ছে বেশি বেশি রঙ্গ,
বন্ধ কর ভোগ নারী অঙ্গ-
পাপ ছত্র ভঙ্গ।

ধনী যত,
ভোগে মত্ত্ব-
হয়ে তপ্ত;
একি মায়া দেশাত্ত্ব!
মানুষ উড়াস ফানুস’
ভোগে ধন-
ভুলে আপন জন,
ঈশ্বর বুঝিতে মন-
দিল প্রাসাদের পণ;
অবুঝ তুই ফানুসে হন হন॥

তোরা যুবক দীপ্ত,
মত্ত্ব ভোগে তৃপ্ত;
হয়ে গেলি সুপ্ত,
মোর হৃদি তপ্ত।

ফিরে আয়, ফিরে আয়;
দেখে তোদের অমাবস্যার চাঁদে,
মোর হৃদি হরদম কাঁদে।

ভুলে সৎ কর্ম,
হলি বিমুখ ধর্ম;
এত রোগ চর্ম,
শেষে বুঝিবি মর্ম॥

আছে কি ¯^i‡Y,
সবার মরণে;
যাহা সঞ্চয়,
হবেনা ভূঞ্জয়;
সত্য কর বিশ্বাস,
ভীত নয় শেষ নি:শ্বাস।

সংশয়ে আমি

ওরে হিংস্র,
হ কংস;
আমি থাকি সংশয়,
প্রতিরোধে ধ্বংস।

যত থাকে তোর ব্যাপ্তি;
আমি থাকি না লুপ্ত,
জাগে মোর মেধা-
যা অব্যক্ত সুপ্ত।
তুই সংশক সপ্ত,
আমি বুঝিরে বুঝি-
কিভাবে করি তোরে রপ্ত।

তুই হাকাস মোরে-
চল বাম চল বাম,
আমি বুঝি তোর খেয়ালী’
বলি, না ডান ডান,
এ যেন ফুক বানের পথে-
রামায়ণের শান।

ওরে হিংস্র মোরে টান-
মোরে টান,
আমি জেগে উঠি-
জাগুক মোর মনোবল;
হোশনা সুপ্ত ভাই,
তোর প্রশাংসা করি-
তুই যে বন্ধু তাই,
সহজে সাফল্য কুড়ি।
অনুতাপে আমি

রক্তচোষা মন,
কই আপন জন, আপন জন;
পিয়াসী পিয়াসী মন,
কই আপন জন, আপন জন।

নেহে নেহে আলিঙ্গনে ক্ষন;
ধনের বাহার, চল হন হন হন,
শব্দে শব্দে বায়ু শন শন শন-
লালিত্যের ভাষা টন টন টন;
স্থায়ী কি? মনে আনচান আনচান,
ফুল পাপিয়া কুঞ্জের কোন,কুঞ্জের কোন।

তাড়িত হৃদয়ে দৃঢ়তার পণ,
মশায়ের মুখে ক্ষণ অনুক্ষণ;
শব্দশ্বাষে শব্দাংশের টান,
লালিত্য হৃদয়ে অর্থের বান;
কবি বলে, ও জান ও জান।

নেহের পল−বী নেহের মান,
স্থায়িত্ব লোভে পুলকের দান;
ওসবে কবি নয়, তানি তান,
এ যেন অতৃপ্ত হৃদয়ে-
অনুতাপের বান, অনুতাপের বান।

নবীনের পথে

নবযাত্রী যবে  চালায় নবযান,
ভীরু কাঁপে থরথর-
মারে পিছু টান।

ওরে নবীন, তোরা দীপ্ত;
প্রবীনের সুরে হোশনা লুপ্ত;
তোদের ৱিদ্ধতনু লয়ে-
চলিবে অভিযান,
ফুলে ফুলে ভরিবে বসুধা,
গড়িবে নতুন ভূবন॥

ওরা জীর্ণতায় ডগমগ,
এ যেন মসৃণ পথে-
বিষাক্ত নাগ;
তোদের বিপদে ফেলিবে বলে-
জনবলে রব তোলে;
গেল ওরা গেল, অস্তাচলে।

ওদের নিদ্রারোষে ভরা মর্ম,
ওরা বোঝেনা নবীনের ধর্ম;
তোরা হোশনা ওদের ভক্ত,
নেই আর পিছু টানের ওয়াক্ত;
এখনই জলিবে মশাল,
চল সামনে চল-
গাহিয়া প্রভাতের গান॥

 নবযাত্রী

এসেছ নতুন দেশে-
হে নবযাত্রী,
বসেছ জুটি বেশে-
গড়তে সমভাত্রী;
পাড়ি দিয়েছ-
তোমাদের কেশর,
গড়িতে ভূবন ধ্রিয়মান যৌবন-
সেই মহা ঈশ্বর।

গগনে গগনে পবনে পবনে-
তোমাদেরই গীত,
চাদরের তলে ঘুমিয়ে থেকনা-
ভেবে মহাশীত॥
শ্রান্তদর্শে ছুটে চল-
লুফিতে স্বপদ,
আধার ভাবিওনা-
ঐতো মহাচাঁদ॥

তোমাধর্ম তোমাকর্ম-
রাখ স্ববেশে,
সময় এসেছে ধরণী গড়ার
রইওনা ধ্যাত বশে॥

এসো এসো সোনা জ্যোতি,
মন্থর করি বর্জন;
যাযাবরের মত কর্ম মাঝে,
করি স্বপদ` অর্জন॥

জীবন যুদ্ধ

জীবনের রণক্ষেত্রে,
বাধা সর্বত্রে;
মানিনা মানিনা এ বাধা,
ভেঙ্গে দেব সকল বাধা-
কঠোর হস্তে॥

অনল নিভে যাবে রে যাবে,
বাতাসে শষ্য  দুলিবে রে দুলিবে;
প্রকৃতিতে ভরিবে ধরা,
শুধু হিংসায় করবি তোরা-
হিংস স্বাপদ যারা॥

নব যৌবনের ছোয়া-
যাদের রয়েছে,
এস সঙ্গি করি;
জীবন যুদ্ধে নেমেছি মোরা-
ভাসিয়ে জীবন তরী॥

পশ্চাদে ডাকে ওরা-
ফিরে আয় ফিরে আয়,
জীবনে আধার আসবে তোদের-
তবুও মুছে যাবেনা অন্যায়॥

ভীরু ওরা, ওরা কাপুরুষ;
ওদের বাক্যে করবনা কর্ণপাত,
বীরদর্পে এগিয়ে যাব-
আমরা বীরের জাত;
আমরা দুর্জয় দুর্বার,
ভুমিতে থাকবেনা কোন-
অন্যায় অত্যাচার॥

ওরা হাস্য করবে রে করবে-
বলবে কটু কথা;
মোরা শুনবোনারে ব্যঙ্গক্তি,
লইবনা হৃদয়ে ব্যথা॥

স্টীমার বেগে চলব মোরা-
হয়ে শ্রান্ত,
লুফে নেব মোদের চাওয়া-পাওয়া,
হবনা কখনো ভ্রান্ত॥

সমতা

গরীব ধনী অদ্য,
এত মানবতার লৌকিক ছত্র;
ওরে মানব বিদ্বেষী ভদ্র,
আন্‌ প্রমাণ, দেখা ফর্দ;
মানবে নেই অসমতা-
নেই ব্রাহ্মণ শুদ্র।

শুনে তোদের গর্জন,
ধরে ওরা ধৈর্য;
না পেয়ে সঠিক প্রাপ্য,
করে কর্য;
হাস্যকর নয়,নয় লম্পঝম্প।

ওরা কর্ম করে ওক্ত,
হয়ে কঠিন-শক্ত;
চুষে খাস ওদের রক্ত,
তবুও ওরা মহান-
গাই গুনগান,
ওরা তোদেরই ভক্ত।

পাবি না কুড়ে খাওয়ার প্রমাণ,
ওরা মানুষ ওদেরও আছে মান;
ওদের কর সম্মান-
গারে গা সমতার গান।



বাস্তবতা

আমার নয়নে নেই-
সালামতের সুপ্তি,
চারিপাশে শুধু কন্টাকাকীর্ণ পথ,
আর মাতমের সুদূর ব্যপ্তি;
আমি চির জাগ্রত,
নয়নে নেই সালমতের সুপ্তি।

হস্তে নেই সম্পদের পর্যপ্ততা,
বৃদ্ধি হোক ঋনের বোঝা-
স্থাবর হোক গাম্ভীর্যতা,
সমাজকে দেখাতে সম্পদের হাত;
ক্রয় করি দামী খেলাত,
আমি যে বড়লোকের জাত।

পরনে চাকচিক্যের লেবাস,
কেশের নব স্টাইল-
আর ওযুদে পুলকের ছাপ;
উন্নত ধরনীর বসবাস,
দেখান সঙ্গীতের বাদ্য কানে-
মূলে, বুঝিনা গীতিকথার মানে।

মর্মতলে অসহিষ্ণতার প্রসার,
বাহিরে লালিত্যের প্রকাশ;
আস্ফালনের ভাব যামে যামে,
ওহে তত্ত্বানেষী-
মূলে, স্বাছন্দ নেই প্রাণে।


কংসের ভুল

আমি কংস’
হনি মানুষ, বেশ করি ধ্বংস;
ভুজি রক্ত মাংস।
তবু কেন বানাও ছন্দ,
পাইয়াও মন্দ-
আমার পাপের দুর্গন্ধ।

আসলে তুমি জীবনের আলো;
সতীর সৎ ভালোর ভালো-
চাঁদের আলো।

আমি নষ্ট এ তো স্পষ্ট,
সত্যের বিরোধী মানবতার কষ্ট;
দ্বন্দ্ব করি সৃষ্ট-
তবুও কেন এবুকে জাগাও আশা-
দাও নির্মল ভালোবাসা,
দেখ হয়ো না কোণঠাসা।

আসলে তুমি সঙ্গীর সুর,
ভালবাস বেদনা বিধুর;
কংসের ভাঙাও ভুল,
তুমি যে সঙ্গীতের সুর।

আমি মহা ধাপাবাজ,
পিঁশাচী মোর রক্তে সাজ-
বাহিরে অশুভক্ষণের ধাঁচ;
তবুও কেন দেখাও মোহ,
দাও মায়াভরা ৱেহ-
এমন তো করেনা কেহ?

আসলে তুমি বাজনার তাল;
তরীতে দিয়েছ নতুন পাল,
আহা! এভাবে যদি কাটাও সারাকাল-
তুমি যে বাজনার তাল।


নিঃশ্বাস

চলেছি অনেক পথ,
পেয়েছি কিনার;
রাখব মায়াযত-
পাড়ি দেব অজানার॥

চেওনা যেন সঙ্গী হতে
বিফল হবে তুমি
একা একা হবে যেতে
ওহে সঙ্গীকামী॥

ভালোবাসার জয়-
করেছি ভূঞ্জয়,
যাকে দিয়েছি বেশি-
সেতো দেখেনি আসি॥

যে ছিল জীবন,
করেনি স্মরণ;
মরণের পর-
আহাল্লাদে করবে যা করন॥

যে ছিল হৃদয়-
করেছি তারে আদর,
হয়েছি অনাদয়-
পেয়েছি অনাদর॥

যা ছিল সম্পদ-
হবেনা বন্ধু,
স্বাপদের বেশে-
ছোবল দেবে;
ছাড়বেনা কিন্তু॥

এইতো কিনার,
রাখব মায়াযত;
পিছু ডেকো না ডেকো না শত-
পাড়ি দেব অজানার॥


কষ্টের প্রেম

কষ্ট, তুমি মোরে এত ভালবাস;
তাইতো দুদিন পরে পরে,
দেখি তোমাকে-
তুমি মোর কাছেই ছুটে আস॥

কষ্ট, তুমি তো মোর প্রাণের চাওয়া,
তুমি না থাকলে -
জীবনে আসে অথই শূণ্যতা;
তোমারই আগমন-
যেন পরম পাওয়া॥

কষ্ট, তুমিই মোর প্রিয়জন;
পথে প্রান্তরে, কাজে কর্মে
মোর চিরসঙ্গী-
তুমিই মোর জীবন,
কতনা আপন॥

কষ্ট, তোমাকে জানাই সাধুবাদ;
হৃদয় গহিনে-
জাগ্রত স্বপনে,
তোমাকে না পেলে-
মেটেনা মনের সাধ,
কষ্ট, তোমাকে ধন্যবাদ॥


শহীদের ডাকে

ঐ পারে তোহখানার মাজার-
শুয়ে আছেন শাহ নেয়ামতুল¬াহ পীর;
এ পারে সোনা মসজিদ প্রাঙ্গণে-
ক’খানা কবর,
তারই মাঝে শান্তির ঘুমে-
ঘুমিয়ে আছেন,
শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর।

স্বর্ণাক্ষরে লেখা নাম-
আর নির্দেশনা পড়তে গিয়ে-
আমি তন্দ্রা মাঝে ডুবে গেলাম,
হঠাৎ হাঁক শুনে চেতনে এলাম,
বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ আমারে বলল,
‘কিরে এত গন্ডগোল কেন?
তাহলে কি আবার এদেশ দখল নিয়েছ-
ওদেশের হামড়া গোমড়া পৈশাচার শাসক?
তাহলে কি আমায় আবার -
পরতে হবে, সেই যুদ্ধের পোশাক?

আমি বললাম, না তা হয়নি-
তা  হতে পারে না;
বীর শহীদ বলল’
তবে এত গন্ডগোল কেন?
বললাম, কি জানি
ভাইয়ে ভাইয়ে কি হয়েছে যেন।

বীর শহীদ বলল-
বুঝতে পেরেছি বোকাদের গল্প;
ক্ষমতা আর লোভ-
সৃষ্টি করেছে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব,
কিন্তু মোরাতো চায়নি এমন-
চেয়েছি শান্তির সমাজ-
মিলনের অনুক্ষণ॥



ভালবাসি তোমার খেয়ালী

আমি ভালবাসি-
তোমার ফাল্গুনের মৌ মৌ গান,
কোকিলের কুহকুহ কলতাল-
আর প্রকৃতি পাখির গান।

আমি ভালবাসি-
চৈত্রের অসহ্য দাবদাহ রোদ্রুও,
ভালবাসি তোমার মাথা হেট করানো-
কৃষকের ঘামঝরা দুপুর।

আমি ভালোবাসি-
তোমার বৈশাখের ঝড়ো তান্ডব,
পশ্চিমাকাশে জমানো কালো মেঘ;
ভালবাসি তোমার ঝড়ের কান্ড,
আর খেয়ালী পশ্চিমা ঝঞ্ঝার বেগ।

আমি ভালবাসি-
জৈষ্ঠের মিষ্টি গন্ধের আমেজ,
যখন পড়েছে আম-জাম পাকার রেস;
মায়ের হাতে আমের পিঠার পে¬ট-
এসব আমি, ভালবাসি বেশ।

আমি ভালবাসি-
আষাড়ের খরতাভরা বৃষ্টি,
ঐ দূরে মেঘের হুংকার ছড়ানো গর্জন;
ভালবাসি মেঘে ঢাকা অন্ধকার গগণ,
আর ভালবাসি বৈচিত্র খেয়ালী কৃষ্টি।

আমি ভালবাসি-
শ্রাবণের বৃষ্টির অঝরধারা,
ব্যাঙের ঘ্যাংর ঘ্যাংর ডাক তাড়া তাড়া;
জলজপ্রাণীর উচ্ছাস পাগল পারা,
আর ভালবাসি মেঘ শূণ্য আকাশের তারা।


আমি ভালবাসি-
ভাদ্রের জোছনা ভরা আকাশ,
এরাতে কাশবন দোলানো বাতাস;
ভালবাসি নিশিগন্ধার ঘ্রাণ,
আর ভালবাসি-
পূর্ণিমারাত জাগা, প্রণয়ের উচ্ছাস প্রাণ।

আমি ভালবাসি-
আশ্বিনের সমবনীতা তাপ বেশ;
বাউলের গানের ছন্দ,
ভালবাসি শরৎ শিশিরের বিন্দু;
আর বিকেলে দিগন্তের শেষ।

আমি ভালবাসি-
কার্তিকের নবান্ন উৎসব;
ভালবাসি কৃষকের ব্যস্ততা,
কুমারীর উদগ্রীব চোখ,
আর সযত্ন্রে গাথা মালা;
ভালবাসি ব্যস্ত গ্রামের কলরব।

আমি ভালবাসি-
অগ্রাহায়নের পিঠা খাওয়ার ধুম;
মায়ের কণ্ঠে মিষ্টি ডাক,
আর বোনের দুষ্টুমী বকবক,
ভালবাসি বউয়ের ভালবাসা হরদম।

আমি ভালবাসি-
পৌষের বাংলা মায়ের ঘোমটাপরা মুখ;
ভালবাসি খেজুরের রস,
আর চাদর জড়ানো বাবার ঠক ঠক;
ভালবাসি মায়ের মায়ামুখের হাসিতে -
অতৃপ্ত সুখ।

আমি ভালবাসি-
মাঘের হাড় কাপানো জাড়;
ফজর নামাজ শেষে আগুন তাপানো গল্প,
সকালে সূর্যের হাসি আর অল্প অল্প;
ভালবাসি বাংলা মায়ের ফিকফিকে হাসির রোল।



ঋতুরাজ বসন্ত

বসন্ত, তুমি বাঙ্গালীর সুখ;
তুমি ফাল্গুনে ফোটা-
সহস্র ফুলে  ভরা-
বাংলা মায়ের হাসি মুখ॥

বসন্ত, তুমি কোকিলের কণ্ঠে-
কুহকুহ ধ্বনীর গান,
তুমি প্রেমিক প্রেমিকার’
জমে থাকা-
অভিসারের আলাপন॥

বসন্ত, তুমি রিক্ততার অবসান;
তুমি আমের মুকুলে ভরা-
ভ্রমরের গুঞ্জন করা-
বাংলার আম বাগান॥

বসন্ত, তুমি বৃদ্ধ, যুবক,
শিশু কিশোরের-
হৃদয়ের স্পন্দন,
তুমি আম-জাম-
কাঁঠাল-বাতাবী লেবু-
বাংলা ফলের আগমন॥

বসন্ত, তুমি জীর্নতার অবসান;
তুমি সবুজের আবেসে-
জেগে ওঠা-
বাংলা মায়ের প্রাণ॥

বসন্ত, তুমি আধ-ছায়ার অবসান;
তুমি তারকার মেলায়-
কোমূদী ভরা-
সোনালী আসমান॥

বসন্ত, তুমি বৃষ্টির আর্তনাদে-
বাঁশ পাতার ধ্বনিতে নুপুর’
তুমি কৃষাণের শ্রমে-
চৈত্রের খরায়-
ঘাম ঝরা এক দুপুর॥

বসন্ত, তুমি বৃষ্টির সুর টুপ-টুপ;
তুমি চৈত্রের পবণে দোলা-
ফসল হেরি-
কৃষাণের ভরসায় ভর্ণা বুক॥

বসন্ত, তুমি ঋতুদের রাজ;
তুমি প্রকৃতির বদলে-
সবুজের আবেসে-
সোনালী রং এর সাজ॥



২১-এর স্মরণে

আবার এসেছে একুশ,
এ যে গর্ব-এ যে অহংকার;
যে দিন জানিয়েছে বাঙালী-
আমরা দুর্জয় দুর্বার॥

আবার এসেছে একুশ,
এ যে বিজয় বাংলার;
হেতু প্রাণ দিয়েছে’
আমার ভাই-
রফিক, সালাম, বরকত,
অহিউল্লাহ, শফিউর ও জব্বার॥

আবার এসেছে একুশ;
আমার ভায়ের রক্ত ঝড়া দিন,
যে দিন পেয়েছি মোরা-
মোদের প্রাণের ভাষা,
মায়ের ভাষা-
বাংলা ভাষা অমলিন॥

আবার এসেছে একুশ;
আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো দিন,
শ্রদ্ধা ভরে স্মরি তাদের-
যারা বাজিয়েছে,
বাংলা ভাষার জয়ের বীণ॥

বিজয় স্বর্নশ্যাম বাংলার

৭১ এর বীর মুক্তিসেনা
তোমরা নির্ভীক;
হেরি-
সহস্র মানুষের ব্যাকুলতা,
দিয়েছ পশুদের হানা’
এনেছ প্রানের চাওয়া-
স্বাধীনতা।

দেখেছ বাংলার মায়ের আহাজারী;
স্বান্তনা দিয়েছ-
বলেছ থাকবেনা হাহাকার,
থাম থাম-
তুমি,কেদনা আর,
আসছে ১৬ ডিসেম্বর।

তোমরা বাংলার বীর,
জীবন কে করেছ তুচ্ছ’
শত্রু হননে হয়েছ মত্ত্ব-
করি উদ্ধৃত তোমাদের শির॥

তাইতো বিজয়ের পরে,
যুগ যুগ ধরেও;
অম্বরে বাজছে-
তোমাদের অমরতা,
জীবন দিয়ে এনেছে যারা-
প্রাণের স্বাধীনতা।

বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বর;
স্বরি অমর শহীদদের-
স্বরি বীর সেনাদের-
যারা গর্ব আমার,
গর্ব স্বর্ণশ্যাম বাংলার-মার॥


গ্রামের মেঠোপথে

এই গ্রামের এই মেঠোপথে,
আমি গিয়েছি কতদুর হেঁটে হেঁটে;
বিলের ওপারে শনির হাটে,
আমি গিয়েছি কত হেঁটে হেঁটে;
আমি ভুলিনি কিছুই তার-
কেমনে ভুলি বল গৌরব বাংলার।

কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলা,
বন্ধুর সাথে,
খেলতে না পেয়ে,
কারো অভিমান তাতে
আমি ভুলিনি কিছুই তার-
কেমনে ভুলি বল গৌরব বাংলার।

ভাদ্রের শেষে ,নববর্ষের মেলা,
মারবেল ডাঙ্গুলি’
আর কত শত খেলা,
আর বোনের বানানো শাপলার মালা;
আমি ভুলিনি কিছুই তার-
কেমনে ভুলি বল গৌরব বাংলার।

অতুলনীয় গ্রাম

মর্মে রহিয়াছে-
মোর গ্রাম,
যাহা, মোর অমৃত প্রাণ;
যতই কর
তুমি ভুবনে অভিযান,
পাবেনা খুঁজে-
আমার গ্রামের মত গ্রাম॥

যেথা আছে-
এক ছোট্ট পাঠশালা,
সেথা বসে রোজ-
বিদ্যার মেলা;
সন্ধ্যা হলে-
মাথার পরে উঠে শশধর,
মিলে মিশে থাকি সবে-
নাহি কেহ পর;
যতই কর তুমি
ভুবনে অভিযান,
পাবেনা খুঁজে-
আমার গ্রামের মত গ্রাম॥

গ্রামের ধারে-
বিলের মাঝে-
বসে পক্ষীর মেলা,
সেথায় তারা মিলেমিশে-
করে কত খেলা;
যতই কর তুমি
ভুবনে অভিযান,
পাবেনা খুঁজে-
আমার গ্রামের মত গ্রাম॥

খোদার লীলা

খোদা তুমি গড়িয়া আদম-
পাঠাইলা ভবে,
বলিলে স্মরণ করিবে-
যতদিন রবে।

পাঠাইলে ইবলিশ-
সেতো শয়তান,
নষ্ট করিবে  ঈমাণী প্রাণ;
মানবকে করিবে জ্ঞানান্ধ,
করিবে ভ্রমান্ধ;
ভুলিবে সৎকর্ম-
হইয়া ধর্মান্ধ॥

বুঝিয়া মর্ম-
পাঠাইলে ঈমাণের ছবি,
যুগে যুগে কত তোমারই দূত নবী;
তারা সত্যই তোমার নবী-
দিতে খেতাব,
নাযিল করিলে আসমানী কিতাব॥

তোমারই রাসুল-
বুঝাইবে মিথ্যার মাশুল,
মানব আসিবে সত্যের ধর্মে,
ব্রতী হইবে সৎ কর্মে॥

নশ্বরের মাঝে ঈশ্বর তুমি;
কর আপন খেলা,
ভূমির মত বানিয়ে-
কর্মের মেলা;
বুঝা বড় দায়-
তোমারই লীলা।

আব্দুল অসীম

ঘুমিয়ে আছো-
আব্দুল অসীম
আমার ৱেহের ভ্রাতা,
জীবন-মরণে থাকবি তুই-
হৃদয় মাঝে গাঁথা॥

ছেড়ে গেলি কেন মরে-
ও ৱেহের আঁখি,
খাঁচা হলো অবরিত-
ও হৃদয় খাঁচার পাখি॥

মোর কাছে ছিলি তুই-
সোনার চেয়ে দামী,
ঘুমিয়ে গেলে
বাধল বুকে
শত শত গমি॥

তোর কথা মনে হলে
দু:খ জমে বুকে,
বল না তুই
তোরে ছাড়া-
কেমনে থাকি সুখে॥

মা

মায়ের চোখের পানি,
অভিশাপ জানি-
সে পানি যেন বের না হয়;
মাগো তোমার ছেলে আমি
সবকথা না মানি-
অভিশাপ দিওনা আমায়।।

মাগো তোমার কোলে-
তুলেছিলে বলে,
আমি সুখী সন্তান;
তোমার হাসি যে,
সুখ আমার মাগো-
মুখখানা করো না ভার।।

মাগো তোমার মায়াতে-
পরশের ছায়াতে,
আমি সুখী সন্তান;
তোমার আদর যে
সুখের সাগর মাগো-
মুখখানা করো না ভার।।

ধর্ম আড়ালে

ধর্ম ধ্যানে, মোল¬ার মনে-
সহিষ্ণু নেহের পল¬বী,
হওরে হও দক্ষ,
সিদ্ধিকর মানবতার মোক্ষ,
ছাড় আস্ফালনী রুক্ষ,
বল' মোরা বীর-
নয় কৃশাঙ্গ, নয় অশক্য॥

পূজকিত লেবাস,
শান্তির আভাস-
মর্মতলে লৌহুর পিপাস,
গর্দানে ধর্মের ঢাক;
অহম তৃপ্তিতে, খুশিতে বাগে বাগ,
একি ধর্মের গুরু, নাকি বিষাক্ত নাগ॥

মহানুভব, রাসুলের নামে-
মেলামেশা বিক্রিত বানীর সনে;
নিষ্পাপ মানবেরে টেনে-
এরা জানে, এরা জানে-
বোঝাতে বিপথের বাণী॥

ফিরে আয়, ফিরে আয়-
ছেড়ে দে ধর্ম কলুষিত দূরাচার,
অমন গোমটা ওজুদে-
মানায় না আর;
গারে গা ধর্মের গান,
কর মানব মোক্ষের ধ্যান,
পাবি খোদার শান্তির বাগান॥


অন্ধের পথ

নিস্তব্ধ রাত ধুধু অন্ধকার,
আলোর পথে শক্ত কপাট;
মঞ্চের ওপারে নরকের হাট,
ওরা বলে, বেঁচে থাক, নেও মুখের ¯^v`|

বিদ্যুৎ চমকানো আলোর দানে,
ছুটে চলে রুদ্ধপথ পানে;
বলে, ভাসাইয়া আলোর তরী,
দেখ, কতপথ দিয়েছি পাড়ি;
বানিয়েছি নব উন্নত গাড়ি,
পাব সুখ কত, কত টাকা-কড়ি।

বানাইয়া নাটের পুতুল,
কত উৎসুক, উচ্ছল;
বলে এ মোদের সৃষ্ট-
মোরা খুব বড়ই তুষ্ট;
দেখ মোরা গিয়েছি কতদূর।

তৈয়ার করে মহাশূণ্য যান,
বলে এ মোদের জ্ঞানের দান;
যতই গাও প্রমাণের গান,
মোরা জানি, নাই বিধাতার প্রাণ;
তারই সৃষ্ট লক্ষ্য করে,
বোকা বলে জোরে জোরে-
শোন পাখিদের কলতাল,
তারা গায় প্রযুক্তির গান।

ওদের অন্ধে ভরা মন,
ওরা গায় ক্ষণিকের গান অনুক্ষণ;
ওরা বোঝেনা আসল জ্ঞান,
অসীমের অস্তিত্ব-
বিরাজের প্রাণ॥


ইসলাম

মারহাবা! মারহাবা! মারহাবা!
ইসলাম! এ যে সত্যের পথ,
ব্রহ্মার আলোয় আলোকিত-
মানবতার মহারথ;
এ যে সত্যের পথ॥

মারহাবা! মারহাবা! মারহাবা!
ইসলাম! এ যে খোদার এক মাত্র দ্বীন,
তিমির নিশা-সম আধারের মাঝে-
ভানু দীপ্ত প্রভাতের বীণ,
এ যে খোদার দ্বীন॥
   
মারহাবা! মারহাবা! মারহাবা!
ইসলাম! এ যে খোদার দান,
এ সত্যের পথে সুন্নাহ রবে-
নেই শিরক, বিদআত, অন্যায়ের স্থান;
এ যে খোদার দান।

 মারহাবা! মারহাবা! মারহাবা!
ইসলাম! এ যে খোদা, রাসূলের পরিচয়,
ঈমাণী শক্তির বলে-
সৃষ্ট মূর্তি প্রভুর বিদায়-
এ যে হক খোদা রাসূলের পরিচয়

মারহাবা! মারহাবা! মারহাবা!
ইসলাম! এ যে জালিম পিশাচের পরাজয়,
আর ধর্মদ্রোহীর পথে
ঈমাণী শক্তির মহাজয়,
পিশাচের পরাজয়॥

প্রিয় নবী (সা:)

ওগো খোদার নবী-
তোমার ছবি-
আছে এই অন্তরে,
আছ তুমি জীবন মাঝে-
থাকবে মরণ প্রান্তরে॥

নামটি তোমার মোহাম্মদ-
আছে মোদের জানা,
তোমার লাগি খোদার কাছে-
পায় মোরা পানাহ॥

সত্য তুমি, সত্য তোমার বানী,
তোমার ধর্ম মোরা-
ইসলাম নামে জানি;
জীবন পথে চলতে যদি
হয়ে যায় ভুল,
তোমার দেওয়া নির্দেশনায়
খুজে পায় কূল॥

চলার পথটি কখনো
হয় যদি দুর্দম,
পড়ি দুরূদ তোমার সানে
যামে যামে ও হরদম;
তুমি মিষ্ট, তুমি শ্রেষ্ঠ
মোদের জীবন মাঝে,
তাইতো তোমায় করি মনে
সকাল দুপুর সাঝে॥


বিশ্ব বিধাতা

সশ্রদ্ধচিত্তে নমি তোমারে-
হে গুরু, মহাগুরু;
তোমারই দয়া দক্ষিণে
জীবন করিলাম  শুরু-
ওহে মহাগুরু॥

শত ব্যথা ভুলি-
মুছিয়া জিগর গমি,
দুহাত উপরে তুলে-
সশ্রদ্ধচিত্তে তোমারে নমি;
তোমার দয়ায়
এখন তো মোর কিছু নাই কমি;
তোমার করুণায়-
জীবন করিলাম  শুরু,
ওহে গুরু, মহাগুরু॥

প্রভাত আলোয়-
শুরু হয় মোর কাম,
জপি পবিত্র তোমারই নাম;
তবুও আপদে কাঁপে-
বুকটা দুরু দুরু,
গুরু ওহে মহাগুরু॥

তোমার করুণায়-
কোমল ঠান্ঠা এই ধরা,
তোমারই হুকুমে-
অসহ্য দাবদাহ কৃষকের ঘামঝরা;
তোমারই ইশারাই-
অট্টালিকা হয় কুড়ো,
ওহে গুরু, মহাগুরু॥

তোমারই হুকুমে-
পক্ষী গাইতে গাইতে ওড়ে,
অঝর ধারায় বৃষ্টি ঝরে;
গজায় নব বৃক্ষ তরু,
ওহে গুরু মহাগুরু॥

তোমার পূর্ণ নিয়ামত
গাইতে পারিবনা
পানাহ কর মোরে
আমি চিরকিঙ্কর
ওহে মহাগুরু, বিশ্ব-বিধাতা
ধরণীর ঈশ্বর॥

No comments:

Post a Comment